সহ মৌলিক সংখ্যা কি?
সহ মৌলিক সংখ্যা গণিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা মূলত সংখ্যা তত্ত্বে ব্যবহৃত হয়। এটি এমন দুটি সংখ্যাকে নির্দেশ করে যেগুলোর মধ্যে কোনো সাধারণ মৌলিক গুণনীয়ক থাকে না, অর্থাৎ তাদের গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক (GCD) বা গা.সা.গু ১ হয়। উদাহরণস্বরূপ, ৮ এবং ১৫ দুটি সংখ্যা একে অপরের সহ মৌলিক সংখ্যা, কারণ তাদের কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই, এবং তাদের সা.গু ১। সহ মৌলিক সংখ্যার ধারণা গণিত এবং বিজ্ঞানে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ভূমিকা পালন করে।
সহমৌলিক সংখ্যার গুরুত্ব
সহ মৌলিক সংখ্যা গণিতের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংখ্যা তত্ত্বের জটিল সমস্যা থেকে শুরু করে বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এ ধারণা ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, এনক্রিপশন অ্যালগরিদমে বা প্রাইম সংখ্যা বিশ্লেষণে সহ মৌলিক সংখ্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই গণিত এবং এর ব্যবহারিক প্রয়োগে সহ মৌলিক সংখ্যা একটি প্রয়োজনীয় উপাদান।
সহ মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে?
সহ মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে টা জানতে হলে আপনাকে জানতে হবে;সহ মৌলিক সংখ্যা হলো এমন দুটি পূর্ণসংখ্যা যাদের মধ্যে একমাত্র সাধারণ গুণনীয়ক হলো ১। সহজভাবে বলতে গেলে, সহ মৌলিক সংখ্যা মানে হলো দুটি সংখ্যা যাদের মধ্যে কোনো সাধারণ মৌলিক গুণনীয়ক নেই। উদাহরণস্বরূপ, ৯ এবং ১৪ দুটি সংখ্যা সহ মৌলিক কারণ তাদের মধ্যে কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই এবং তাদের সা.গু ১।
সহ মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে তা বোঝার জন্য সা.গু নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি দুটি সংখ্যার সা.গু ১ হয়, তবে তারা সহ মৌলিক। উদাহরণস্বরূপ, ৭ এবং ২০ এর মধ্যে কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। তাই তারা সহ মৌলিক। গণিতের ভাষায়, যদি GCD(a,b)= 1GCD(a,b)=1, সহ মৌলিক।
এই ধারণাটি সংখ্যা তত্ত্বে বহুল ব্যবহৃত হয় এবং বিভিন্ন প্রয়োগে যেমন ক্রিপ্টোগ্রাফি, গাণিতিক সমস্যার সমাধান এবং অ্যালগরিদমে ব্যবহার করা হয়। সহ মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে তা জানতে হলে প্রথমে মৌলিক সংখ্যা ও তাদের গুণনীয়ক বুঝতে হবে।
মৌলিক সংখ্যা ও সহ মৌলিক সংখ্যার পার্থক্য
মৌলিক সংখ্যা এবং সহ মৌলিক সংখ্যা দুটি আলাদা ধারণা। মৌলিক সংখ্যা হলো এমন সংখ্যা যা কেবলমাত্র ১ এবং নিজেই দ্বারা বিভাজ্য। উদাহরণস্বরূপ, ২, ৩, ৫, ৭ ইত্যাদি। অন্যদিকে, সহ মৌলিক সংখ্যা হলো দুটি সংখ্যা যাদের সা.গু ১।
পার্থক্যগুলো নিম্নরূপ:
- মৌলিক সংখ্যা: একটি সংখ্যা যা কেবল দুটি গুণনীয়ক নিয়ে গঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ১১ একটি মৌলিক সংখ্যা।
- সহ মৌলিক সংখ্যা: দুটি সংখ্যা একসাথে গঠিত হয় যেগুলোর মধ্যে কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। উদাহরণস্বরূপ, ৮ এবং ৯।
সহ মৌলিক সংখ্যা গণনার ক্ষেত্রে GCD বা সা.গু ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, মৌলিক সংখ্যা চিহ্নিত করতে সংখ্যার বিভাজ্যতার পরীক্ষা করা হয়। এই দুটি ধারণা একে অপরের সাথে সম্পর্কিত হলেও ব্যবহারিক এবং তাত্ত্বিক দিক থেকে আলাদা।
সহ মৌলিক সংখ্যা বের করার উপায়
সহ মৌলিক সংখ্যা বের করার জন্য GCD নির্ণয় করা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। GCD বের করার জন্য ইউক্লিডিয়ান অ্যালগরিদম বা মৌলিক গুণনীয়কের সাহায্য নেওয়া যায়।
উদাহরণস্বরূপ, ধরি দুটি সংখ্যা ৩৫ এবং ৬৪।
১. প্রথমে মৌলিক গুণনীয়ক নির্ণয় করুন।
২. এই সংখ্যাগুলোর কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই।
৩. তাই, ৩৫ এবং ৬৪ সহ মৌলিক সংখ্যা।
আরেকটি পদ্ধতি হলো তালিকা পদ্ধতি, যেখানে প্রতিটি সংখ্যার গুণনীয়ক তালিকা করে সাধারণ গুণনীয়ক খুঁজে বের করা হয়।
১১ ও ১৩ কি সহ মৌলিক?
১১ এবং ১৩ দুটি মৌলিক সংখ্যা এবং তাদের মধ্যে কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। তাই, এই দুটি সংখ্যা সহ মৌলিক।
১১ এবং ১৩ এর সা.গু ১। অর্থাৎ, এদের মধ্যে কোনো সাধারণ গুণনীয়ক না থাকায় তারা সহ মৌলিক সংখ্যা। এর অর্থ হলো, দুটি মৌলিক সংখ্যা একে অপরের সাথে সহ মৌলিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
দুটি সহ মৌলিক সংখ্যার লসাগু কত?
দুটি সহ মৌলিক সংখ্যার লসাগু (LCM) তাদের গুণফলের সমান হয়। যদি দুটি সংখ্যা aaa এবং bbb সহ মৌলিক হয়, তবে তাদের লসাগু LCM(a,b)=LCM(a,b)=a×b।
উদাহরণস্বরূপ, ধরি ৯ এবং ১০।
- এদের সা.গু ১।
- তাই, এলসিএম(9,10)=9×10=90।
এভাবে দুটি সহ মৌলিক সংখ্যার লসাগু নির্ধারণ করা যায়।